রসায়ন কি? শাখা, গুরুত্ব ও উদাহরণ

রসায়ন কাকে বলে?

যে বিজ্ঞানের সাহায্যে বস্তু বা পদার্থের গঠন, প্রস্তুত প্রণালী, ধর্মাবলী, ব্যবহার তাপীয় ও বৈদ্যুতিক পরিবর্তন প্রভৃতি সুস্পষ্ট বিধিযোগে সুষ্ঠুরুপে পর্যালোচনা করা যায় তাকেই রসায়ন বিজ্ঞান বলে।

রসায়ন হলো বিজ্ঞানের একটি শাখা যা পদার্থের গঠন, কাঠামো, ধর্ম এবং পারস্পরিক ক্রিয়া-বিক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করে। রসায়নবিদরা মনে করেন বিশ্বের যাবতীয় বস্তু পরমাণু দিয়ে গঠিত। দুই বা ততোধিক পরমাণু রাসায়নিক বন্ধন দ্বারা আবদ্ধ হয়ে অণুর সৃষ্টি করে।

রসায়নের শাখা

রসায়নের বিভিন্ন শাখা রয়েছে, যেমন:

  • অজৈব রসায়ন: অজৈব পদার্থের গঠন, কাঠামো, ধর্ম এবং পারস্পরিক ক্রিয়া-বিক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করে।
  • জৈব রসায়ন: জৈব পদার্থের গঠন, কাঠামো, ধর্ম এবং পারস্পরিক ক্রিয়া-বিক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করে।
  • বিশ্লেষণাত্মক রসায়ন: পদার্থের গঠন এবং পরিমাণ নির্ণয়ের পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করে।
  • ভৌত রসায়ন: পদার্থের ভৌত ধর্ম এবং রাসায়নিক পরিবর্তনের সাথে সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করে।
  • জৈবপ্রযুক্তি: জীবন্ত প্রাণীর কোষ এবং টিস্যু ব্যবহার করে বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনের প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করে।

রসায়নের গুরুত্ব

১. খাদ্য ও পুষ্টি: রাসায়নিক বিক্রিয়া আমাদের খাদ্য হজম করতে সাহায্য করে, খাদ্যে পুষ্টির পরিমাণ নির্ণয় করে এবং খাদ্য সংরক্ষণে ব্যবহৃত হয়।

২. ঔষধ ও চিকিৎসা: রাসায়নিক বিক্রিয়া ঔষধ তৈরি, রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় এবং টিকা তৈরিতেও ব্যবহৃত হয়।

৩. জ্বালানি ও শক্তি: রাসায়নিক বিক্রিয়া জ্বালানি পোড়াতে সাহায্য করে, জীবাশ্ম জ্বালানির বিকল্প উৎস তৈরিতে ব্যবহৃত হয় এবং নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস তৈরিতেও ব্যবহৃত হয়।

৪. পোশাক ও টেক্সটাইল: রাসায়নিক বিক্রিয়া কৃত্রিম তন্তু তৈরি, কাপড় রং করতে এবং কাপড় পরিষ্কার করতে ব্যবহৃত হয়।

৫. নির্মাণ ও অবকাঠামো: রাসায়নিক বিক্রিয়া ইট, সিমেন্ট ও ইস্পাত তৈরি, রাস্তা, সেতু ও ভবন নির্মাণে এবং পানি ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ব্যবহৃত হয়।

৬. পরিবেশ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ: রাসায়নিক বিক্রিয়া দূষণকারী পদার্থ দূর করতে, পরিবেশগত ঝুঁকি নিরূপণ করতে এবং পরিবেশবান্ধব পণ্য তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।

৭. কৃষি ও খাদ্য উৎপাদন: রাসায়নিক বিক্রিয়া সার ও কীটনাশক তৈরি, মাটির উর্বরতা পরীক্ষা করতে এবং জিনগতভাবে পরিবর্তিত ফসল তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।

৮. প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন: রাসায়নিক বিক্রিয়া নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনে, ন্যানোটেকনোলজি ও মহাকাশ অনুসন্ধানে এবং ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।

৯. জীববিজ্ঞান ও জীবন্ত প্রাণী: রাসায়ন জীবের কোষ, টিস্যু ও অঙ্গের কার্যপ্রণালী বোঝার জন্য, ঔষধ ও টিকা তৈরিতে এবং জিনগত প্রকৌশল ও জিন থেরাপিতে ব্যবহৃত হয়।

১০. শিক্ষা ও গবেষণা: রসায়ন বিজ্ঞানের একটি মৌলিক শাখা যা শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানের ধারণা শেখানোর জন্য, নতুন পণ্য, প্রযুক্তি ও ঔষধ উদ্ভাবনের জন্য এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে গবেষণার জন্য ব্যবহৃত হয়।

রসায়নের কিছু উদাহরণ

  • রান্না করা
  • ওষুধ তৈরি করা
  • জ্বালানি উৎপাদন করা
  • প্লাস্টিক তৈরি করা
  • ধাতু নিষ্কাশন করা
Premium By Raushan Design With Shroff Templates

Related Posts

Post a Comment