জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং কি?
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, যাকে জিন প্রকৌশলও বলা হয়, জীবের জিনোম পরিবর্তনের মাধ্যমে তাদের বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করার একটি প্রক্রিয়া। জীববিজ্ঞান, রসায়ন, পদার্থবিদ্যা, এবং প্রকৌশলের জ্ঞান ব্যবহার করে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ার জীবের জিনগত গঠন পরিবর্তন করতে পারেন।
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ
1. জিনগতভাবে পরিবর্তিত জীব (GMO) তৈরি:
- উদ্ভিদ: উন্নত ফসল উৎপাদনের জন্য জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যবহার করে উদ্ভিদের জিন পরিবর্তন করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, পোকামাকড় প্রতিরোধী, ভেষজনাশক সহনশীল, এবং খরা সহনশীল জাত তৈরি করা।
- প্রাণী: জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যবহার করে দ্রুত বর্ধনশীল, রোগ প্রতিরোধী, এবং উন্নত মানের মাংস উৎপাদনকারী প্রাণী তৈরি করা।
2. জিন থেরাপি:
- জিনগত রোগের চিকিৎসার জন্য জিন থেরাপি ব্যবহার করা হয়। জিনগত ত্রুটি সংশোধন করে জিন থেরাপির মাধ্যমে রোগ নিরাময় করা সম্ভব।
- ক্যান্সার, থ্যালাসেমিয়া, সিস্টিক ফাইব্রোসিস, হিমোফিলিয়া ইত্যাদি রোগের চিকিৎসার জন্য জিন থেরাপি ব্যবহার করা হয়।
3. ঔষধ এবং টিকা তৈরি:
- জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যবহার করে ইনসুলিন, ইন্টারফেরন, ইরিথ্রোপয়েটিন, হিউম্যান গ্রোথ হরমোন ইত্যাদি ঔষধ তৈরি করা হয়।
- জিনগত ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যবহার করে হেপাটাইটিস B, হেপাটাইটিস C, HPV, COVID-19 ইত্যাদি ভ্যাকসিন তৈরি করা হয়।
4. কৃষিক্ষেত্রে উন্নতি:
- জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যবহার করে উন্নত বীজ, সার, এবং কীটনাশক তৈরি করা হয়।
- জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যবহার করে কৃষিক্ষেত্রের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করা সম্ভব।
5. জীববিজ্ঞান গবেষণা:
- জিনের কার্যপ্রণালী, জিনগত নিয়ন্ত্রণ, এবং জিনগত বৈচিত্র্য সম্পর্কে জানতে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যবহার করা হয়।
- জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যবহার করে নতুন জিন এবং জিনোমের কার্যপ্রণালী আবিষ্কার করা সম্ভব।
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং একটি অত্যন্ত শক্তিশালী প্রযুক্তি যা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিপ্লবী পরিবর্তন আনতে পারে। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা সম্ভব।
Post a Comment
Post a Comment