অনুজীব (Microorganisms) হলো এমন সব ক্ষুদ্র জীব যাদের খালি চোখে দেখা যায় না, এবং যাদের দেখতে অণুবীক্ষণ যন্ত্রের প্রয়োজন হয়। এদেরকে প্রধানত পাঁচ প্রকারে ভাগ করা যায়:
১. ব্যাকটেরিয়া (Bacteria)
ব্যাকটেরিয়া হলো এককোষী প্রোকারিওটিক জীব, অর্থাৎ এদের কোষে কোনো সুগঠিত নিউক্লিয়াস থাকে না। এরা পৃথিবীর প্রায় সব পরিবেশে, যেমন মাটি, জল, বায়ু এমনকি অন্যান্য জীবের দেহেও পাওয়া যায়। কিছু ব্যাকটেরিয়া উপকারী, যেমন দই তৈরিতে ব্যবহৃত ল্যাকটোব্যাসিলাস (Lactobacillus), আবার কিছু ব্যাকটেরিয়া রোগের কারণ হতে পারে, যেমন সালমোনেলা (Salmonella)।
২. ভাইরাস (Virus)
ভাইরাস হলো অতি ক্ষুদ্র সংক্রামক কণা যা শুধুমাত্র একটি জীবন্ত কোষের ভেতরেই বংশবৃদ্ধি করতে পারে। ভাইরাসের নিজস্ব কোনো কোষীয় গঠন নেই এবং এরা প্রোটিন আবরণ দ্বারা আবৃত জেনেটিক উপাদান (ডিএনএ বা আরএনএ) নিয়ে গঠিত। ইনফ্লুয়েঞ্জা, হাম, এবং কোভিড-১৯ (COVID-19) এর মতো অনেক রোগের জন্য ভাইরাস দায়ী।
৩. ছত্রাক (Fungi)
ছত্রাক হলো ইউক্যারিওটিক জীব, অর্থাৎ এদের কোষে সুগঠিত নিউক্লিয়াস থাকে। এরা এককোষী (যেমন ইস্ট) বা বহুকোষী (যেমন মাশরুম) হতে পারে। ছত্রাক পচনশীল বস্তুর উপর জন্মায় এবং পচন প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিছু ছত্রাক উপকারী, যেমন পেনিসিলিন (Penicillin) অ্যান্টিবায়োটিক তৈরিতে ব্যবহৃত পেনিসিলিয়াম (Penicillium) ছত্রাক, আবার কিছু ছত্রাক উদ্ভিদে বা মানুষের ত্বকে রোগ সৃষ্টি করতে পারে।
৪. প্রোটোজোয়া (Protozoa)
প্রোটোজোয়া হলো এককোষী ইউক্যারিওটিক জীব। এরা সাধারণত জলে বাস করে এবং চলাচলের জন্য সিলিয়া (Cilia), ফ্ল্যাজেলা (Flagella) বা সিউডোপড (Pseudopod) ব্যবহার করে। অ্যামিবা (Amoeba) ও প্যারামেসিয়াম (Paramecium) হলো প্রোটোজোয়ার উদাহরণ। কিছু প্রোটোজোয়া মানুষের মধ্যে রোগ সৃষ্টি করতে পারে, যেমন ম্যালেরিয়ার পরজীবী প্লাজমোডিয়াম (Plasmodium)।
৫. শৈবাল (Algae)
শৈবাল হলো সালোকসংশ্লেষী ইউক্যারিওটিক জীব। এরা এককোষী বা বহুকোষী উভয়ই হতে পারে এবং সাধারণত জলজ পরিবেশে পাওয়া যায়। শৈবাল অক্সিজেন উৎপন্ন করে এবং জলজ খাদ্য শৃঙ্খলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। স্পিরুলিনা (Spirulina) এবং ক্লোরেলা (Chlorella) হলো কিছু পরিচিত শৈবাল।
Post a Comment
Post a Comment